করোনা চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহারের অগ্রগতি কতদূর?  

বিশ্বজুড়ে আবারও বাড়তে শুরু করেছে কোভিড-১৯ মহামারীর প্রকোপ। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে টিকা তৈরি হয়েছে এবং সীমিত পরিসরে টিকাদান কর্মসূচিও চলমান। তারপরেও কোন কিছুতেই যেন ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না করোনা ভাইরাসের নতুন এই সংস্করণকে।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি টিকা তৈরি হলেও, টিকা গ্রহণের পরেও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। অন্যদিকে রোগটি চিকিৎসায় সর্বজন স্বীকৃত কার্যকরী তেমন কোনও পদ্ধতি বা ঔষধের খোঁজ মেলেনি এখনও। সব মিলিয়ে দেশে দেশে বেড়ে চলেছে মৃত্যুহার।

তবে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহার ইতিমধ্যে জন মানুষের মধ্যে আশার আলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। বিশেষত, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চিকিৎসায় এটি ব্যবহারের পর তা বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি কি?

আমাদের দেহে যখন কোন রোগ বা ভাইরাসের আক্রমণ ঘটে তখন প্রাকৃতিক ভাবেই আমাদের দেহে এক ধরণের অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয় যা সেই বিশেষ রোগ বা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। আর মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি হলো ল্যাবরেটরিতে তৈরি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডির অনুকৃতি।

কোভিড-১৯ এর অ্যান্টিবডি কতটা কার্যকর?

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত মানুষের দেহে এক ধরণের বিশেষ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। যা পরবর্তীকালে প্রায় ৫-৭ মাস কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। আশার কথা হলো এই ধরণের অ্যান্টিবডি বিজ্ঞানীরা তাদের ল্যাবরেটরিতেও তৈরি করতে পারেন।

এটি অবশ্য একেবারে নতুন কিছু নয়, এর আগে বিজ্ঞানীরা এইচআইভি ও ইবোলা প্রতিরোধেও মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির ব্যবহার করেছেন।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি উৎপাদন প্রক্রিয়া কতদূর?

ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে বেশ কিছু স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এই ধরণের মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি তৈরি করতে শুরু করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরুরি প্রয়োজনে এসব অ্যান্টিবডি ব্যবহারের অনুমতিও প্রদান করেছে।

বর্তমানে উৎপাদিত হচ্ছে এমন মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির মধ্যে ইলি লিলি এন্ড কোম্পানির তৈরি বামলানিভিমাব ও এস্তেসেভিমাব, রিজেনেরোভের আরইজিএন-সিওভি-২ ও রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান বায়োক্যাডের তৈরি ল্যাভিলিমাব প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

তবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে নতুন নতুন কোভিড-১৯ ভাইরাসের স্ট্রেইন আবিষ্কৃত হওয়ায় এইসব মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ভাইরাসটির সবগুলি স্ট্রেইনের বিরুদ্ধেই সমান ভাবে কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে

Share this news on: